কেনো পৃথিবীতে করোনা ?
উত্তর আসবে: না, জানিনা ! আবার আনেকে বলবে চীনের ল্যাব থেকে ছড়ানো হয়েছে তারা পৃথিবীটা শাসন করতে চায় এই জন্য!
হু এমননি বলবে সবাই। কিন্তু একটু চিন্তা করলে করোনার উত্তর পাওয়া যাবে। আমার যদি বিগত ২০ বছর পূর্বে থেকে ফিরে আসি দেখবো বা দেখতে পাবো পৃথিবীতে বিভিন্ন মুসলিম দেশে কিভাবে তাদের নির্যাতন করা হয় তাদের মাসের পর মাস অবরুদ্ধ করে রাখা হয়, তাদের বাসগৃহে বৃষ্টি মতো বোমা ফালানো হতো, মায়ের সামনে ছেলেকে হত্যা করা হতো, ছেলের সামনে মাকে ধর্ষন করা হতো ও বাবার সামনে মেয়েকে। ফিলিস্তিনিরা নিজ পর্ণ ভূমি জেরুজালেম রক্ষার জন্য কি ভাবে নির্যাতের স্বীকার হচ্ছে। খাবার না পেয়ে কতশত ইয়েমেনীয়রা মারা গেছে আমারা ভুলে গেছি।
আজকে সিরিয়া,আফগানিস্তান, লিবিয়া,ইরাক, ইরান, মিশর,মায়নমার,ভারত, চিন,জেরুজালেম কিংবা আফ্রিকার মুসলিম দেশ গুলোতে কি অবস্থায় তারা জীবনযাপন করতেছে কল্পনা করেছি কি আমরা? না করিনী।
এই সব দেশের মানুষ মাসের পর মাস অবরুদ্ধ থাকতো ঘর থেকে বের হতে পারতোনা বাইরে। আজকে আমরা দুইদিন ঘরে থাকতে পারিনা। ঘরে এরা তাহলে মাসের পর মাস কিভাবে ছিল। কল্পনা করুন? কত অজুহাতে আমরা ঘরথেকে বের হচ্ছি কিন্তু এরা বের হলে লাশ হয়ে ফিরতো জালিমের হাতে।অবরুদ্ধ আবস্থা এদের খাবার, চিকিৎসা,নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিতে বাইরে যেতে পারতোনা। চোখের সামনে হাজার হাজার বোমার আঘাতে তাদের থাকার যায়গাটাও ধূলিস্বাত হয়ে গেছে। এবং কি কারো মূত্যু হলেও এরা কবর পর্যন্ত দিতে পারতোনা একজনই দিত একাই লাশ কাধে নিয়ে কবর দিতো । স্বামীর কবর দিত স্ত্রী আর ছেলের কবর পিতা। খাবার অভাবে এরা গাছের পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করতো। পুষ্টির অভাবে কতশত শিশু মারা গেছে তার সঠিক হিসাব কারো কাছে নেই।কত বোন তাদের ইজ্জত হারিয়েছে আমরা জানিনা। আমরা কোনদিনও সাহয্য তো দুরের কথা প্রতিবাদটুকুও করিনি। এটা জানার পরও যে এক মুসলিম অন্য মুসলিম ভাই ভাই। এক, ভাইযের কিছু হলে অন্য ভাই সাহয্যের হাত বাড়াবে ।
একবেলা খাবারের জন্য চেয়ে থাকতো পথের দিকে তাদের ভাই তাদের জন্য খাবার নিয়ে যাবে।কিন্তু আমরা বাড়াইনি তাদের জন্য হাত। তারা পথ চেয়ে থাকতে থাকতে আল্লাহ কাছে আমাদের বিরুদ্ধে নালিশ করছে যে আমরা যেভাবে আছি এর এতুটুকু কষ্টতাদের (বলতে আমাদের ) দিও আর আজ আমরা তাদের মামলায় আসামি হয়ে শাস্তি ভোগ করছি।
আজ আমরা করোনা নামক একতুচ্ছ ভাইরাসের কাছে নতিস্বীকার করতেছি কিন্তু সিরিয়ার সেই শিশুগুলোর কথা মনে আছে রাসায়নিক গ্যাস এর ফলে তাদের কি হয়ে ছিল।আমাদের মনে নেই থাকবেই বা কেন আমাদের ঘরেতো আগুন লাগেনি। এবার ঘরে আগুন লেগেছে যেটা হলো করোনা। দেখুন তো চোখ খুলে করোনা ফলে আজ সারাবিশ্ব অবরুদ্ধ যেমনটা ছিল মুসলিম দেশ গুলো। মুসলিম দেশ গুলোতে যেভাবে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল এবার আমরা নিজে নিজেকে অবরুদ্ধ করেছি। অবরুদ্ধ থাকা কী কষ্টের বুঝতে পারছিতো?
নির্যাতিত মুসলিমরা যেভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যেত এবার আমরা যাচ্ছি । হয়েছে কী করোনার কোন ভেকসিন আবিষ্কার, না হয়নি। করোনায় আক্রান্তরা বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তারা খাবার না পেয়ে গাছের পাতা খেয়ে জীবনযাপন করতো।এবার দেখুন আমাদের অবস্থা অবরুদ্ধ থাকার ফলে নিম্ন আয়ের ও মধ্যবিত্ত্য মানুষের কাছে এখনি খাবার নেই খোঁজ নিয়ে দেখুন। জাতিসংঘ ও বিশ্বখাদ্যসংস্থা বলতেছে সারা পৃথিবীতে খাদ্য সংঙ্কট দেখা দিতে পারে ভয়াবহ ভাবে। এখনি আমারা ত্রাণ এর জন্য মারামারি করতেছে। রাস্তায় আন্দোলন করতেছি ঘরে খাবার নেই বলে।বিভিন্ন দেশে বাসায় বাসায় ত্রাণ পৌঁছায় দেওয়া হচ্ছে।কেননা এভাবে অবরুদ্ধ থাকলে তারা না খায় মারা যাবে।
করোনায় মারা গেলে কোন অপনজন পাশে থাকতেছেনা। গোসল জানাজা এবং কি কবরের উপরেও ঠিক মতো মাটি পড়েনা। যেমনটা নির্যাতিত মুসলামদের পাশে থাকতে পারতো না তাদের প্রিয় মানুষ গুলো।
রাসায়নিক গ্যাস,বোমা,গুলি ইত্যাদি দিয়ে মুসলামানদের হত্যা করা হতো। কত মা ছেলে-মেয়েকে হারিয়েছে, কত ছেলে- মেয়ে এতিম হয়েছে, স্বামী তার স্ত্রীকে হারিয়েছে, ভাই বোনকে। কত পরিবার, বংশ বা গোত্র আজ বিলিন হয়ে গেছে বোমার আঘাতে।তেমনি করোণারর ফলে আমারা এসব কিছু হারাচ্ছি আমাদের মাঝ থেকে।
করোণার ফলে কোন দেশ অন্য দেশকে যেমন সহযোগিতা করছেনা,যাতায়াত বন্ধ,বিভিন্ন সেবা বন্ধ আক্রান্ত দেশ থেকে আলাদা করে ফেলতেছে এটা হলো নির্যাতিত দেশগুলো থেকে আমরা যেমন আলাদা হয়ে ছিলাম তাদের পাশে দাঁড়াইনি এখন আমাদের পাশে কেহ দাঁড়াচ্ছেনা দিচ্ছেনা কোন সহযোগিতা যা দিচ্ছে তা নাম মাত্র।
তারা মসজিদে যেতে পারতোনা বোমার আঘাতে নিহত হওয়ার ভয়ে, ঈদের নামাজ, তারাবীহর নামাজ পড়তে পাতোনা। তাদের মতো মসজিদে যেতে পারিনা,তারাবীহর নামাজ বন্ধ সব দেশে হয়তোবা ঈদের নামাজ ও বন্ধ থাকবে করোণার ভয়ে।
করোনার ফলে আমাদের শ্বাসকষ্ট হয় মনে আছে সিরিয়ায় রাসায়নিক গ্যাস এর ফলে তাদের কি রকম শ্বাসকষ্ট হতো।
নির্যাতিত মুসলিমদের কষ্টের একশো ভাগের এক ভাগ শুধু আমাদের মাঝে। যদি আরো বাড়ে তাহলে কী হবে আমাদের, একটি বার চিন্তা করেছি কী আমরা?
করোণা থেকে বাঁচাতে চাইলে সকল প্রকার ভুলত্রুটির জন্য মহান আল্লাহপাক এর কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই।
আল্লাহ মজলুমের দোয়া,এতিমদের, মায়ের দোয়া অবশ্যই কবুল করবেন। করেছেন বলে আমাদের মাঝে আজ করোণা নামক ভাইরাসের ছোবল।করোনা কিন্তু আমাদের মাঝে শুধু পরীক্ষা হিসাবে আসেনি শিক্ষা হিসাবে এসেছে। করোনার ফলে আমাদের মাঝে যা হচ্ছা তা কিন্তু অবরুদ্ধ, নির্যাতিত মুসলিমদের থেকে কম।
আসুন আমরা করোনা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন এই করোণা মহামারি থেকে মুক্তি দেয়।
মো: তাফহিমুল ইসলাম
শিক্ষানীবিশ সাংবাদিক
Post Views:
257